সোহেল রানা : হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ৫৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া, কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের চেষ্টা সহ নানা অপরাধে জড়িত হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের হিসাব ভবনের প্রশাসন-১ অডিট এন্ড একাউন্টস অফিসার রাশেদুল ইসলাম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার সন্ধ্যায় তাকে রাজবাড়ীর পাংশা বাজার এলাকা থেকে রাজবাড়ী জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) গ্রেপ্তার করেছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজবাড়ী জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ওসি মোঃ মনিরুজ্জামান খান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানাগেছে, রাজবাড়ীর পাংশায় সোনালী ব্যাংকে গত ১৪ আগস্ট ৪জন এসে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিঃ চুয়াডাঙ্গা শাখার ওবিসি নং ২৪/২৩, টোকেন নং ০০০০২৪২১, পিও নং জিই ০০৩১৫৮১, তারিখ ৯ আগস্ট মূলে মোঃ শাহরিয়ার আলম জুনিয়র অফিসার, আইডি নং ৭৩৭০, ইউসিবিএল, চুয়াডাঙ্গা ব্রাঞ্চ এর স্বাক্ষরিত ২৩ লক্ষ ৬ হাজার ৪৬৫ টাকা আনুতোষিক বিল প্রেমেন্টের জন্য উপস্থাপন করেন। বিলটি পেমেন্টের এ্যাডভাইজের সফট কপি না থাকায় তিনি পাংশা উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটর মোঃ সিরাজুল ইসলামকে এ্যাডভাইজ প্রেরণের জন্য মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অবগত করেন। তিনি তার অফিসের রেকর্ডপত্র যাচাই করে বিলটি তাদের অফিস থেকে ইস্যু করা হয়নি ও সবাইকে বসিয়ে রাখতে বলেন। তখন তিনি সোনালী ব্যাংক শাখায় এসে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হন বিলটি ভুয়া ও জাল। তখন তারা স্বীকার করে জালিয়াতির মাধ্যমে বিলটি তৈরী করে সরকারী টাকা আত্নসাতের জন্য বিলটি সোনালী ব্যাংকে দাখিল করেছেন। পরে পাংশা উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটর সিরাজুল ইসলাম থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার আগুনিয়াপাড়ার মৃত নওশের আলী বিশ্বাসের ছেলে মোঃ আল বেরুনী (অভি) (৩২), মোঃ আল বেরুনী (অভি)’র স্ত্রী মোছাঃ মৌসুমী আক্তার শিলা (৩০), মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার কসবা গ্রামের মৃত শাহাবউদ্দিনের মেয়ে শামিয়া আক্তার সীমা (৩৮), পাকুড়িয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ শেখের স্ত্রী রোকেয়া খাতুন (৪৫) কে গ্রেপ্তার করেন। তারা পাংশা উপজেলা হিসাব অফিসার (অতিরিক্তি দায়িত্ব) মোঃ সদর উদ্দিন শেখের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে বিল দাখিল করে প্রতারনামুলক সরকারী অর্থ আত্নসাৎ চেষ্টা করায় গত ১৪ আগস্ট থানায় মামলা দায়ের করেন পাংশা এমপি মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় সোনালী ব্যাংক পিএলসি শাখার সিনিয়র অফিসার (আইটি) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। এ মামলার প্রধান আসামী মোঃ আল বেরুনী ওরফে অভি ইতিপূর্বে সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন হিসাবরক্ষণ অফিসের আউটসোসিং হিসেবে কাজ করাকালীন। তবে ওই সময়ে পাংশা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুল ইসলাম চৌধুরীর যোগসাজসে কথিত হ্যাকিংয়ের কথা বলে ৫৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। তবে এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রাশেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওই সময়ে দৃশ্যমান কোন শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
রাজবাড়ী জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ওসি মোঃ মনিরুজ্জামান খান বলেন, এ মামলায় পুলিশ ইতিপূর্বে ৪ প্রতারককে গ্রেপ্তার করে। ওই মামলার সুত্রধরেই রাশেদুল ইসলাম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।