স্টাফ রিপোর্টার : আবহাওয়ার অনুকুল পরিবেশ, বিদেশে মিষ্টি পানের ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার পান চাষিরা দিন দিন ঘুরে দাড়াচ্ছেন। তবে অর্থাভাবে চাহিদা পুরন করতে পারছে না। মিষ্টি পান চাষে উর্বর ভুমি হিসেবে পরিচিত বালিয়াকান্দি উপজেলা। এ অঞ্চলের পানের সুখ্যাতি বহু পরনো। এখানে সাধারনত দু’জাতের পান উৎপাদন হয়। মিষ্টি পান আর সাচি পান। এখানকার মিষ্টি পান চাহিদা মিটিয়ে ৮টি দেশে রপ্তানী করা হয়। তবে সরকারী পৃষ্টপোষকতা ও সহজ শর্তে ঋনের ব্যবস্থা করলে প্রতি বছর কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। অনেক সময় পান চাষীদের বেকায়দায় পড়তে হয়। কারণ রোগের বিষয়ে কৃষি বিভাগে নেই কোন পরামর্শের সুযোগ।
বালিয়াকান্দি উপজেলাতে ৭১৪ টি পানের বরজ রয়েছে। এরমধ্যে ১৫৬টি সাচি পান বরজ ও ৫৫৮টি মিষ্টি পান বরজ রয়েছে। ৭৪ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ করা হয়েছে।
পান চাষী সত্য রঞ্জন পাল, স্বপন রাহা, সুকুমার দে, সমির বলেন, বালিয়াকান্দি উপজেলার আড়কান্দি, বেতেঙ্গা, চরআড়কান্দি, ইলিশকোল, স্বর্প বেতেঙ্গা, খালকুলা, বালিয়াকান্দি, বহরপুর এলাকায় ব্যাপক পানের আবাদ হয়। তাদের পুর্ব পুরুষের আমল থেকে পানের চাষ করে আসছেন। পুর্ব পুরুষের ঐতিহ্য ধরে রাখতে তারাও পান চাষ করছে। পান চাষ লাভজনক হলেও তাদেরকে মাঝে মধ্যে পড়তে হয় নানা সমস্যায়। রোগ হলে সঠিক পরামর্শ পায় না। এ অঞ্চলের সাচি ও মিষ্টি পান প্রচুর জন্মে। তবে সরকারী কোন পৃষ্টপোষকতা ও সহজ শর্তে ঋন পেলে তারা ঘুরে দাড়াতে পারবে। মিষ্টি পান রাজবাড়ী জেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার চাহিদা মিটিয়ে ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, নেপাল, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া রপ্তানী করা হয়। এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়।
পান চাষী শেখ মোঃ রাসেল বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ২ বছর পান রপ্তানী বন্ধ ছিল। গত বছর পানের গোড়া পচা রোগে আক্রান্ত হয়ে লোকসান গুনতে হয়। এবছর লাভের আশা করছে। পানের রোগ হলে বিপদে পড়তে হয়। কৃষি কর্মকর্তারাও কোন পরামর্শ দিতে পারে না। তাই বিষয়টি নিয়ে গবেষণার দাবী জানানো হয়।
পান চাষীরা আরো বলেন, অর্থকরী ফসল পান হলেও তাদের নেই কোন সহযোগিতা। কৃষি অফিস থেকেও তাদেরকে কোন প্রকার সহযোগিতা মেলে না। সরকারী ভাবে তাদেরকে সুদমুক্ত ঋনের ব্যবস্থা করলে পান চাষকে আরো লাভজনক ও জনপ্রিয় করে তোলা সম্ভব হবে।
বালিয়াকান্দি পান বাজারে গিয়ে দেখাযায়, পানের আড়ত বসেছে। পান চাষীরা পান ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করে এনে বিক্রি করছেন। এখানে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পানের ব্যাপারীরা এসে পান ক্রয় করছেন।
বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, এখানকার মিষ্টি পান এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ৮টি দেশে রপ্তানী করা হয়। তবে পানের কোন পুস্তক ও রোগের বিষয়ে কোন প্রতিকারের উদ্ভাবনী ঔষুধের ব্যবস্থা না থাকায় মাঝে মধ্যে অসুবিধায় পড়তে হয়। তিনি পান চাষীদেরকে পরামর্শ প্রদান করা হয়।