স্টাফ রিপোর্টার : রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদের আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে সম্ভাব্য উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণকারী বিশিষ্ট সমাজকর্মী আবুল কালাম আজাদকে নিয়ে মানহানিকর সংবাদ প্রকাশের ঘটনায় আদালতে ৫ কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাজবাড়ীর ১ নং আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন আবুল কালাম আজাদের আপন বড় বোন ও দাদশী ইউনিয়নের গোপিনাথদিয়া আরএএস অটো ফুড প্রোডাক্টস (প্রাঃ) লিমিেিটড এর পরিচালক মোছাঃ রোকেয়া বেগম। আদালতের বিচারক রাজবাড়ীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সুমন হোসেন মামলাটি গ্রহণ করে অভিযোগ তদন্তের জন্য রাজবাড়ী জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী রোকেয়া বেগম উল্লেখ করেছেন, আমি একজন প্রতিষ্ঠিত নারী শিল্পোদ্যোক্তা, সমাজকর্মী ও দুই মেয়াদে জনগণের ভোটে নির্বাচিত রাজবাড়ী জেলাধীন হাবাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭,৮,৯ সংরক্ষিত নারী আসনের একজন সফল সদস্য এবং নিয়মিত আয়কর প্রদানকারী প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ব্যক্তি। পারিবারিকভাবেই সর্বমহলে সুপরিচিত এবং সমাজ হিতৈষী পরিবার হিসেবে সকলের কাছে সমাদৃত। তার পিতা মোঃ আঃ মজিদ মন্ডল রাজবাড়ীর হাবাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ মেয়াদে নির্বাচিত ইউপি সদস্য ছিলেন। পরিবারের ৫ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি পিতার জ্যেষ্ঠ সন্তান । তার পিতার মৃত্যুর পর মাতা মোছাঃ জায়দা বেগম পুরো পরিবারকে একই ছাতার নীচে আগলে রেখেছেন। তার ভাই মোঃ জিয়াউর রহমান রাজবাড়ী সদর উপজেলার বানীবহ ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য, অপর ভাই মিন্টু মন্ডল সরকারী চাকুরীজীবী হিসেবে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে কর্মরত, আবুল কালাম আজাদ জেলা পরিষদে চাকুরী করেন এবং কনিষ্ঠ ভাই মিলন মন্ডল প্রাইভেট ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। বাদীনি ও তার ভাই ১ নং স্বাক্ষী আবুল কালাম আজাদ বিভিন্ন সময়ে এলাকার অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে স্থানীয়ভাবে প্রশংসা অর্জন করেছেন। বাদীনি ও তার ভাই আবুল কালাম আজাদের সামাজিক কর্মকান্ড এবং জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি কুচক্রীমহল দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের পারিবারিক সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাদীনির ভ্রাতা ১ নং স্বাক্ষী আবুল কালাম আজাদ আসন্ন রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে বিলবোর্ড ও পোস্টার প্রদর্শন সহ প্রচার-প্রচারণা শুরু করে। বাদীনির ভাই ১ নং স্বাক্ষী আবুল কালাম আজাদ উক্ত পদে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করার পর থেকেই একটি কুচক্রী মহল বাদীর পারিবারিক ও সামাজিক ভাবমূর্তি বিনষ্টের অপচেষ্টায় লিপ্ত থেকে বাদীনি সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা, নামে-বেনামে বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ প্রেরণ সহ নানা ধরণের অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে অজ্ঞাতনামা কুচক্রী মহলের ইন্ধনে প্রথম ঘটনার দিবসে অর্থাৎ গত ১৯ মার্চ ২০২৪ ইং ৮.৪৬ অপরাহ্ন ১ নং আসামীর সম্পাদনায় এবং প্রকাশনায় পরিচালিত কথিত অনলাইন পত্রিকা (সরকারী অনুমোদন বিহীন) সকালের খবর ২৪ ডট কম এ ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত ২ নং আসামীর প্রত্যক্ষ তত্তাবধানে এবং বার্তা সম্পাদক হিসেবে নিয়োজিত ৩ নং আসামীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় বাদীনির পরিবারকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য “শূণ্য থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক আবুল কালাম আজাদ, কি তার আয়ের উৎস ? ” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন “ সকালের খবর ২৪ ডট কম ” অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশ করে। উল্লেখিত অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে ১, ২ ও ৩ নং আসামী পরস্পর যোগসাজশে বাদীনির প্রয়াত পিতার দারিদ্রতা, অপরাপর ভাইদের আর্থিক অবস্থার বিকৃত বর্ণনা প্রচার ও প্রকাশ করেছেন। এছাড়া উল্লেখিত অনলাইন পত্রিকায় বাদীনির আপন ছোট ভাই ১ নং স্বাক্ষীর নামে-বেনামে বিপুল সম্পদ অর্জন সহ তার মালিকানা হিসেবে বেশ কিছু জমির বিবরণ প্রকাশ করা হয়েছে যাহা সবৈব মিথ্যা। আসামীগণ কোনরুপ তথ্যানুসন্ধান ও যাচাই-বাছাই না করে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাদীনির পারিবারিক, ব্যবসায়িক ও সামাজিক ভাবমূর্তি বিনষ্টের অপচেষ্টাই করেন নাই উপরন্ত বাদীনির ভাই ১ নং স্বাক্ষীর বিরুদ্ধে বেপরোয়া ও ত্রাস সুষ্টিকারী দাপুটে ব্যক্তি হিসেবে কাল্পনিক অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। যার কোন ভিত্তি নেই। এ ধরণের কাল্পনিক অভিযোগ সাংবাদিকতার নীতিমালার পরিপন্থী।
মামলার বিবরণে প্রকাশ, গত ১৯ মার্চ ২০২৪ ইং ৮.৪৬ অপরাহ্নে মোঃ সাইমুন রহমানের সম্পাদনায় এবং প্রকাশনায় পরিচালিত কথিত অনলাইন পত্রিকা (সরকারী অনুমোদন বিহীন) সকালের খবর ২৪ ডট কম এ ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত আখি আক্তারের প্রত্যক্ষ তত্তাবধানে এবং বার্তা সম্পাদক হিসেবে নিয়োজিত মোঃ মাহবুব হোসেনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় বাদীনির পরিবারকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য “শূণ্য থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক আবুল কালাম আজাদ, কি তার আয়ের উৎস ? ” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন “ সকালের খবর ২৪ ডট কম ” অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশ করে। উল্লেখিত অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে আসামীগণ পরস্পর যোগসাজশে বাদীনির প্রয়াত পিতার দারিদ্রতা, অপরাপর ভাইদের আর্থিক অবস্থার বিকৃত বর্ণনা প্রচার ও প্রকাশ করেছেন। এছাড়া উল্লেখিত অনলাইন পত্রিকায় বাদীনির আপন ছোট ভাই ১ নং স্বাক্ষী আবুল কালাম আজাদের নামে-বেনামে বিপুল সম্পদ অর্জন সহ তার মালিকানা হিসেবে বেশ কিছু জমির বিবরণ প্রকাশ করা হয়েছে যাহা সবৈব মিথ্যা। আসামীগণ কোনরুপ তথ্যানুসন্ধান ও যাচাই-বাছাই না করে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাদীনির পারিবারিক, ব্যবসায়িক ও সামাজিক ভাবমূর্তি বিনষ্টের অপচেষ্টাই করেন নাই উপরন্ত বাদীনির ভাই এর বিরুদ্ধে বেপরোয়া ও ত্রাস সুষ্টিকারী দাপুটে ব্যক্তি হিসেবে কাল্পনিক অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। যার কোন ভিত্তি নেই। এ ধরণের কাল্পনিক অভিযোগ সাংবাদিকতার নীতিমালার পরিপন্থী।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে ১ নং আসামী মোঃ সাইমুন রহমান সাংবাদিকতার ছদ্মাবরণে বিভিন্ন সময় সমাজের বিত্তবান ও সম্মানিত ব্যক্তিদের ব্লাকমেইলংয়ের মাধ্যমে অর্থ আদায়সহ মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে হয়রানী করে থাকেন। ২ ও ৩ নং আসামী যথাক্রমে আখি আক্তার ও মোঃ মাহবুব হোসেন ১ নং আসামীর সহযোগী হিসেবে বিভিন্ন সময় মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে অবৈধভাবে সুবিধা আদায় করে থাকেন। চাহিদা মাফিক অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে চরিত্র হননের অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকেন।
১, ২ ও ৩ নং আসামীগণ সাংবাদিকতার ন্যুনতম নীতি আদর্শ অনুসরণ না করে, অভিযোগের বিষয়ে বাদীনি কিংবা পরিবারের অপরাপর কোন সদস্যের বক্তব্য গ্রহণ কিংবা আত্নপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে প্রথম ঘটনার দিবসে গত ১৯/০৩/২০২৪ ইং তারিখে একতরফাভাবে “সকালের খবর ২৪ ডট কম” অনলাইন পত্রিকায় “শূণ্য থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক আবুল কালাম আজাদ, কি তার আয়ের উৎস ? ” শিরোনামে উল্লেখিত ভিত্তিহীন ও মানহানীকর সংবাদ ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে অর্থাৎ অনলাইনে প্রকাশ করিয়াছেন। যাহা “সকালের খবর ২৪ ডট কম” অনলাইন পত্রিকায় ১৯/০৩/২০২৪ ইং তারিখ ৮.৪৬ অপরাহ্নে যঃঃঢ়ং://িি.িংড়শধষবৎশযড়নড়ৎ২৪.পড়স লিংকে আপডেট করা হয়েছে।
১, ২ ও ৩ নং আসামী কর্তৃক বাদীর বিরুদ্ধে প্রকাশিত মানহানিকর সংবাদের কিছু ফটোকপি দ্বিতীয় ঘটনার দিবস ও সময়ে অর্থাৎ গত ২৭/০৩/২০২৪ ইং তারিখ সকাল ১১.০০ ঘটিকার সময় অজ্ঞাতনামা দুইজন আসামী রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় কতক স্বাক্ষীগণ সহ জনসাধারণের মধ্যে বিলি করে দ্রুত সটকে পড়ে। বাদীনি সাক্ষীগণের কাছ থেকে উল্লেখিত খবর পেয়ে “সকালের খবর ২৪ ডট কম” অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত উল্লেখিত রিপোর্ট প্রিন্ট করে বাদীর বিরুদ্ধে প্রকাশিত অভিযোগ সম্পর্কে অবহিত হন এবং উক্ত “সকালের খবর ২৪ ডট কম” পত্রিকার ই- মেইলে বাদীনির ভ্রাতা ১ নং স্বাক্ষী উল্লেখিত সংবাদের একটি প্রতিবাদলিপি সংশ্লিষ্ট পত্রিকার ই-মেইলে প্রেরণপূর্বক আত্নপক্ষ সমর্থনের সুযোগ হিসেবে তা প্রকাশের অনুরোধ জানালেও অদ্যাবধি আসামীগণ কোনরুপ প্রতিবাদলিপি প্রকাশ করেন নাই। উক্ত সংবাদ প্রকাশের ঘটনায় বাদীনি ও তার পরিবারের সদস্য, আত্নীয়-স্বজন সহ বহু শুভানুধ্যায়ীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বাদীনি তথ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইড থেকে সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার মোঃ আব্দুল জলিল স্বাক্ষরিত বাংলাদেশের নিবন্ধিত অনলাইন মিডিয়ার তালিকা সংগ্রহ করিলেও তাহার কোথাও “সকালের খবর ২৪ ডট কম” এর নাম খুজে পাওয়া যায় নাই। অর্থাৎ কথিত সকালের খবর ২৪ ডট কম অনলাইন পত্রিকাটি অনিবন্ধিত, অবৈধ, বেআইনী ও কাগুজে নামসর্বস্ব হইতেছে।
সুচতুর আসামীগণ তাহাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বাদীনি সহ পরিবারের সদস্যদেরকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও ক্ষতি করার মানসে ১ নং আসামীর সম্পাদনায় প্রকাশিত “সকালের খবর ২৪ ডট কম” অনলাই পত্রিকায় ফলাও করে বাদীনির ভাই ১ নং স্বাক্ষীর ছবি সংযুক্ত করে অসত্য, ভিত্তিহীন ও মানহানীকর সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করেন , ২ ও ৩ নং আসামী উক্ত মিথ্যা সংবাদ প্রস্তত করিয়া এবং অজ্ঞাতনামা আসামীগণ প্রকাশিত অনলাইন পত্রিকার প্রতিবেদনের ফটোকপি বিলি ও প্রচার করেন। আসামীগণ পরস্পর যোগসাজশে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করে রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকা সহ বিভিন্ন স্থানে উক্ত অনলাইন পত্রিকার প্রতিবেদনের ফটোকপি বিলি ও প্রচার করিয়া বাদীনি ও তাদের পরিবারের সুনাম ক্ষুন্ন করিয়াছেন। যার দ্বারা আসামীগণ বাদীনির আনুমানিক ৫,০০০০০০০/- (পাঁচ কোটি) টাকার ক্ষতি সাধন করিয়াছেন। এ ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।