Rajbari Protidin

২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , শনিবার
ব্রেকিং নিউজ

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ে ভূল রিপোর্ট !

স্টাফ রিপোর্টার : রাজবাড়ীর সদর হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ে ভুল রিপোর্ট প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে রোগী ও স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
রবিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, রাজবাড়ী সদর উপজেলার বানিবহ ইউনিয়নের বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৪০) রক্তক্ষরণ জনিত সমস্যা নিয়ে গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় হাসপাতালের গেলে জরুরি বিভাগ থেকে গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় । পরের দিন গত ২৯ সেপ্টেম্বর গাইনী চিকিৎসক ডা. নাজনীন সুলতানা দ্রুত শরীরে রক্ত লাগবে বলে রোগীর স্বজনদের জানান। পরে সদর হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগ থেকে আরবিএস,ইউরিন আরইও ব্লাড গ্রুপিং পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়। রক্তের রিপোর্ট বি পজেটিভ দেখে চমকে উঠেন রোগী তাসলিমা । তিনি স্বজনদের বলেন, তার রক্তের গ্রুপ বি নেগেটিভ। হাসপাতালের রিপোর্ট এ বি পজেটিভ আসলো কিভাবে। রক্ত কি তার পরিবর্তন হয়ে গেলো নাকি। তিনি সদর হাসপাতালের নার্সদের বিষয়টি অবহিত করলে তাদের পরামর্শে হাসপাতালের বাইরে নুর ডায়গনস্টিক সেন্টার থেকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর তার ভাগ্নি জামাই শামিম রক্ত নিয়ে পরীক্ষা করান। পরে দেখতে পান রক্তের গ্রুপ বি নেগেটিভ। এ রিপোর্ট নার্সদের কাছে দেখালে নার্সরা আরো বেশী নিশ্চিত হবার জন্য রাজবাড়ী ডক্টরস কেয়ার এন্ড ডায়গ্নস্টিক সেন্টারে পাঠান। পুনরায় সেখান থেকে রক্তের গ্রুপের পরীক্ষা করার পর সেখান থেকেও রক্তের গ্রুপ বি নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। নিশ্চিত হয়ে তার শরীরে বি নেগেটিভ রক্ত দেওয়া হয়।
সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাসলিমা বেগম বলেন, তার কয়েকদিন যাবত খুব ব্লিডিং হচ্ছে। এর আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে স্বাভাবিক হলে বাড়ী চলে যান। এরপর গত ২৮ সেপ্টেম্বর আবার একই সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন। তার মায়ের গায়ে গত দুই বছর আগে বি নেগেটিভ রক্ত দিয়েছিলেন। তার রক্তের গ্রুপ জানেন। এখানে রক্তের গ্রুপের রিপোর্ট যখন এবি পজেটিভ আসলে তিনি চমকে ওঠেন। পরে বাইরের দুইটা ক্লিনিক থেকে তার ভাগ্নি জামাই শামীম রক্তের গ্রুপের পরীক্ষা করালে রিপোর্ট বি নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মত জায়গায় এত বড় ভূল মেনে নেওয়া যায় না। আজ তার সাথে হয়েছে কাল আরেকজনের সাথে হতে পারে । মানুষের জীবন মৃত্যুর ব্যাপার। তাই যারা এ রিপোর্ট গুলো নির্ণয় করে তাদের সচেতন হওয়া দরকার।
এ বিষয়ে রোগীর স্বজন শামীম বলেন, তার ফুফু শাশুড়ী হাসপাতালে শরীরে রক্ত লাগবে। পরে সদর হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগ থেকে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে। তার ফুফু বলেন তার রক্তের গ্রুপ বি নেগেটিভ, কিন্ত এখানের রিপোর্ট এবি পজেটিভ। দেখে আমিও চমকে যাই। পরে বাইরের নুর ডায়গনস্টিক সেন্টারে গিয়ে জানাই, পরে সেখানে চার বার পরীক্ষা করে দেখা যায় রক্তের গ্রুপ বি নেগেটিভ। এরপর নার্সদের কাছে জানালে তারা আরোও নিশ্চিত হবার জন্য বলেন। পরে ডক্টরস কেয়ার থেকে রিপোর্ট করাতে পরে আবার সেখান থেকে রিপোর্ট করাই সেখান থেকেও রিপোর্ট বি নেগেটিভ আসে। এরপর তার ফুফু শাশুড়ীর শরীরে বি নেগেটিভ রক্ত দেওয়া হয়। হাসপাতালের মতো এত গুরুত্বপুর্ণ একটা প্যাথলজি এখানে এত বড় ভূল মেনে নেওয়া যায়না।
নার্স রোমানা বলেন, হাসপাতালের রিপোর্ট রোগীদের সন্দেহ হওয়ায় বাইরে থেকে রিপোর্ট করে আনতে বলেছি। সদর হাসপাতালের টা দেখলাম এবি পজেটিভ আর বাইরের দুইটা রিপোর্ট বি নেগেটিভ তাই পরে বি নেগেটিভ রক্ত ই রোগীর শরীরে দেওয়া হয়েছে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের গাইনী চিকিৎসক নাজনীন সুলতানার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: এস এম হান্নান বলেন, আমি বাসায় এসেছি আগামীকাল অফিসে আসেন কথা বলবো ।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের ইনচার্জ খোকন সরকার বলেন, আমার মাত্র তিনজন টেকনিশিয়ান। লোকবল সঙ্কট । কাজে ভুল থাকতেই পারে ।
রাজবাড়ী সিভিল সার্জন ডা: ইব্রাহিম টিটন বলেন, এত বড় ধরনের ভুল করার কোন সুযোগ নাই। আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো ।

সোশাল মিডিয়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: