সোহেল রানা : পুকুরের পানির উপর ২২ হাজার বাঁশ কাঠ, পাট ও সোলা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে দুই তলা উচ্চতার এ দুর্গাপূজা ম-প। দেবী দুর্গার পাশাপাশি এ ম-পে স্থান পেয়েছে সাড়ে তিনশত প্রতিমা। মূল পূজার পাশাপাশি দক্ষযজ্ঞের কাহিনী, কুঞ্জবনে শ্রীকৃষ্ণের লীলা ও সরকারের উন্নয়নের চিত্র কৃত্রিম মেট্রোরেল সহ বেশ কয়েকটি কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। আয়োজকদের দাবী ব্যতিক্রমী এ আয়োজন দেখতে দেশে ও বিদেশ থেকে আসবেন কয়েক লাখ মানুষের সমাগম ঘটেছে। ম-পের সামনেই বিশাল আকৃতির শিবের মূর্তি। মন্ডপের প্রবেশ করলেই ১৪শত ফুট পায়ে হেঁটে প্রতিমা প্রদর্শন করতে হয়। ম-পের মধ্যে প্রবেশ করলে কোথাও বেশি সময় দাড়িয়ে থাকার উপায় থাকে না। শেষে পৌঁছে যাবে মূল দুর্গা মন্দিরে। দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে ম-পের ভেতর তুলে ধরা হয়েছে দক্ষযজ্ঞ থেকে শুরু করে সতীর পুনর্জন্ম ও ৫১টি শক্তিপীঠের কাহিনী। পুকুরের ওপর তৈরি ওভারব্রীজ, ব্রীজের দুই পাশে ফোয়ারা। কৃত্রিম মেট্রোরেল, ভেতরে যাত্রী হিসেবে রয়েছে ২০ জন মনীষী। এ ভাবেই রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের আলোকদিয়া গ্রামে মহামারী করোনার প্রভাব কাটিয়ে তিন বছর পর আবার ব্যতিক্রমী দুর্গা ম-প তৈরী করা হয়েছে। এ প্রতিমা প্রদর্শণের জন্য থাকবে আরও ৫দিন। প্রতিদিনই হাজার হাজার দেশ-বিদেশের দর্শানার্থীরা ভীড় করছেন।
তাদের দাবী, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার আলোকদিয়া গ্রামের এ আয়োজন ব্যতিক্রমী। বাঁশ আর কাঠ দিয়ে মন্দিরগুলো সজ্জিতকরণ করায় অপরূপ সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে।
ইউসুফ মিয়া দীর্ঘ ১০ বছরের অধিক সময় ধরে প্রতিবছর এ ম-প নির্মাণ করেন। তিনি বলেন, বিগত বছরের থেকে এ বছর বড় পরিসরে ম-প নির্মাণ করা হয়েছে। ৫০জন শ্রমিক তিন মাস ধরে কাজ করেন। এবছর মন্দির তৈরি করতে প্রায় ২২ হাজার বাঁশ ও অনেক কাঠের ব্যবহার করা হয়েছে। এ আয়োজন দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় আয়োজন।
মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ বিশ্বাস বলেন, প্রতি বছর এখানে ব্যতিক্রমী আয়োজন করি। করোনার পর তিন বছর বড় পরিসরে এ আয়োজন করতে পারিনি। এবছর আবার শুরু করেছি। ম-পের ভেতর ৮টি স্থানে সনাতন ধর্মের কাহিনী ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বাঁশ, কাঁঠ, কাপড় ও সোলা দিয়ে ম-পগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। মন্দিরের ভেতরে সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে মেট্রোরেলের ভেতরে মাটির তৈরি মনীষীদের ভাস্কর্য রাখা হয়েছে। তাদের জীবনাদর্শ সম্পর্কে মানুষ যেন জানতে পারেন। সেই তথ্য রাখা হয়েছে। লক্ষ্মী পূজা পর্যন্ত ৫দিন (রবিবার) এ আয়োজন থাকবে।